আপিল
প্রশ্ন: (ক) আপিল কাকে বলে? কে আপিল দায়ের করতে পারেন? দেওয়ানি আপিল কোন কোন বিষয়ে দায়ের করা যায়?
(খ) আপিল আদালতের ক্ষমতা আলোচনা করুন।
(গ) আপীল আদালত কি অতিরিক্ত সাক্ষ্য নিতে পারে? যদি পারে, কোন কোন অবস্থায়? আলোচনা করুন।
(ঘ) কোন কোন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যায় না? মিস আপীল কি? পাল্টা আপীল কি?
(ঙ) 'আপিল মোকদ্দমার ধারাবাহিকতা' আলোচনা করুন।
"আপিল" (Appeal)
"আপিল" (Appeal) বলতে কোন নিম্ন আদালত কর্তৃক প্রদত্ত রায় কিংবা ডিক্রীর সম্পূর্ণ বা আংশিক ভুলের যথার্থতা পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে উচ্চ-আদালতের সংশ্লিষ্ট মামলাটি অপসারণ করাকে বুঝায়। আপিলে বলে একজন ক্ষুদ্ধ পক্ষ নিম্ন আদালত কর্তৃক প্রদত্ত রায় বা ডিক্রীটি সম্পূর্ণভাবে কিংবা আংশিকভাবে ভুলের কারণে বালিত করাইবার উদ্দেশ্যে উর্ধ্বতন আদালতে মামলাটি অপসারণ করে আইন দ্বারা অর্পিত উপশম লাভ করার অধিকারী হয়। আপিলে ভিত্তিতে প্রদত্ত যে কোন রায় বা ডিক্রী মূল মামলার রায় বা ডিক্রীর ন্যায় কার্যকরী হয়ে থাকে।
আপিলে সংজ্ঞায় কলিকাতা হাইকোর্ট তার নগেন্দ্র বনাম সুরেন্দ্র (36 C.W.N 803) মামলায় এই সিদ্ধান্তে উপণীত হন যে, নিম্ন-আদালত কর্তৃক প্রদত্ত কোন মামলার রায়ের বিরুদ্ধে যে কোন ক্ষুব্ধ পক্ষ উক্ত মামলার রায় বাতিল, সংশোধন অথবা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য উর্দ্ধতন আদালতে মেমোরেন্ডামের আকারে যে দরখাস্ত দাখিল করা হয়, তাকেই বলা হয় 'আপিল'।
কে আপিল করতে পারে (Who can appeal?)
যে সকল ব্যক্তিগণ নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন আদালতে আপিল করতে পারেন তারা হলেন—
(১) ডিক্রী জারীর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এরূপ মামলার যে কোন পক্ষ অথবা তার দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত আইনগত প্রতিনিধিবৃন্দ।
(২) এরূপ স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট পক্ষের যে কোন হস্তান্তর-গ্রহীতা, যদি তার নাম মামলার নথিতে অন্তর্ভুক্ত হয়।
(৩) প্রতারণার অজুহাতে নীলাম রদের ডিক্রী জারীর আদেশের বিরুদ্ধে কোন সম্পত্তির একজন নীলাম-খরিদ্দার। এরূপ ক্ষেত্রে, অন্য কোন ব্যক্তি আপিল করার অধিকারী নয়।
পরিশেষে, দেওয়ানি কার্যবিধির ৪১ নম্বর আদেশের ৪নং বিধিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কোন মামলায় যদি একাধিক বাদী কিংবা একাধিক বিবাদী থাকে, এবং যে ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপিল করা হবে, তৎসম্পর্কে সকল দাবীর বা সকল বিবাদীর আপত্তির একটি সাধারণ কারণ বিদ্যমান থাকে, তবে বাদীগণের অথবা বিবাদীগণের মধ্যে যে কোন একজন সমগ্র ডিক্রীটির বিরুদ্ধেই আপিল করতে পারবে।
এইভাবে, উপরে উল্লেখিত ব্যক্তিগণ দেওয়ানি কার্যবিধির বিধান সাপেক্ষে, অধঃস্তন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উর্দ্ধতন আদালতে আপিল দায়ের করতে পারেন।
দেওয়ানি আপিল কোন কোন বিষয়ে দায়ের করা যায়
(In what matters can a civil appeal be filed?)
দেওয়ানি কার্যবিধি, ১৯০৮ এর ধারা ৯৬ মোতবেক নিম্নরূপ ক্ষেত্রে আপিল করা যায়—
(১) এই আইনের গর্ভে বা সময়কালীন বলবৎ অন্য কোন আইন দ্বারা অন্যভাবে ব্যক্তভাবে বিধান ব্যতিরেকে, মূল এখতিয়ার প্রয়োগকারী আদালত প্রদত্ত প্রত্যেক ডিক্রি হতে উক্ত আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল শ্রবণের জন্য ক্ষমতা প্রাপ্ত আদালতে আপিল দায়ের করা যাবে।
(২) একতরফা প্রদত্ত মূল ডিক্রি হতেও আপিল দায়ের করা চলবে।
(৩) পক্ষগণের সম্মতিতে আদালত দ্বারা প্রদত্ত ডিক্রি হতে কোন আপিল দায়ের করা চলবে না।
তবে 'দেওয়ানি কার্যবিধি, ১৯০৮ এর ৯৭ ধারা মোতাবেক, যখন কোন পক্ষ এই আইন বলবৎ হবার পর প্রদত্ত কোন প্রাথমিক ডিক্রির ফলে সংক্ষুব্ধ হয়েও উক্ত ডিক্রি হতে আপিল দায়ের না করে, তখন চূড়ান্ত ডিক্রি হতে দায়ের হতে পারে এরূপ কোন আপীলে উহার সঠিকতা সম্পর্কে বিবাদ হতে সে নিবৃত্ত থাকবে।
ইহা ছাড়াও আদেশ ৪৩ এর ১ বিধিতে বর্ণিত আদেশসমূহের বিরুদ্ধে ১০৪ ধারার আওতায় আপিল করা যায়। তবে এ সকল আপিলকে 'বিবিধ আপিল' বলা হয়।
যে সকল আদেশের বিরুদ্ধে দেওয়ানি 'বিবিধ আপিল' দায়ের করা যায়—
(Orders against which civil 'miscellaneous appeals' can be filed)
সাধারণত: নিম্ন আদালতের রায় ও ডিক্রির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করা হয়। যে সকল আদেশের বিরুদ্ধে দেওয়ানি কার্যবিধির বিধান মতে আপিলের অনুমতি রয়েছে, সে সম্পর্কে এ আইনের ৪৩ আদেশের ১ বিধিতে বর্ণিত হয়েছে। এই সকল আদেশের বিরুদ্ধে ১০৪ ধারার আওতায় 'বিবিধ আপিল' করতে হয় তা নিম্নরূপ:
(১) নিম্নলিখিত আদেশগুলো হতে আপিল করা যায় এবং এই আইনের ভিতর বা বর্তমানে বলবৎ কোন আইন দ্বারা অন্যভাবে স্পষ্ট উল্লেখ ব্যতিরেকে অন্য আদেশ গুলো হতে আপিল করা যাবে না—
(ক) হতে (চ) বিলুপ্ত;
(চচ) ৩৫ক ধারার আওতায় প্রদত্ত আদেশ;
(ছ) ৯৫ ধারার আওতায় প্রদত্ত আদেশ;
(জ) ডিক্রি জারিতে গ্রেফতার বা দেওয়ানি কারাগারে আটকের আদেশ ছাড়া এই আইনের যে কোন বিধানের আওতায় জরিমানা আরোপ বা কোন লোককে গ্রেফতার বা দেওয়ানি কারাগারে আটক করার নির্দেশমূলক আদেশ;
(ঝ) নিয়মাবলীর দ্বারা আপিল ব্যক্তভাবে মঞ্জুর হয় এরূপ নিয়মাবলীর আওতায় প্রদত্ত আদেশ:
[তবে শর্ত এই যে, অল্প পরিমাণ অংকের অর্থ প্রদানের আদেশ দেয়া উচিত ছিল না বা ছিল এই অজুহাত ছাড়া (চচ) দফায় উল্লেখিত যে কোন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল চলবে না।।
(২) এই ধারানুযায়ী আনীত আপীলে প্রদত্ত কোন আদেশ হতে আপিল চলবে না।
আপীল-আদালতের ক্ষমতা কি কি?
(What are the powers of the Court of Appeal?)
১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ১০৭ ধারায় এবং একই আইনের ৪১ নম্বর আদেশের ২৩ নং বিধি হতে ২৯নং বিধিগুলিতে আপিল আদালতের ক্ষমতা সম্পর্কে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
"আপিল আদালতের ক্ষমতা" সম্পর্কে দেওয়ানি কার্যবিধির ১০৭ ধারায় বিশেষভাবে উল্লেখ যে, আইন দ্বারা আরোপিত শর্ত এবং সীমাবদ্ধতা সাপেক্ষে, প্রত্যেক আপিল আদালত এই ধারার (১) নং উপধারা মতে, নিম্নবর্ণিত ক্ষমতাগুলি প্রয়োগ করার অধিকার থাকবে; যেমন—
(ক) কোন মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করা। অর্থাৎ যেক্ষেত্রে যথেষ্ঠ পরিমাণে রেকর্ডকৃত সাক্ষ্য প্রমাণ প্রতীয়মান হবে, সেক্ষেত্রে আপিল আদালত চূড়ান্তভাবে মামলাটি নিষ্পত্তি করার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।
(খ) কোন মামলা পুনর্বিচারের জন্য প্রেরণ করা। অর্থাৎ যেক্ষেত্রে নিম্ন আদালতে একটি মামলা প্রাথমিক পয়েন্টের উপর নিষ্পত্তি করা হয়েছে এবং আপিলে মাধ্যমে ডিক্রী পাল্টানো হয়েছে, সেক্ষেত্রে আপিল আদালত মামলাটি ফিরতি বিচারের জন্য নিম্ন আদালতে পাঠাতে পারেন।
(গ) বিচার্য-বিষয় প্রণয়ন এবং সেগুলি বিচারের জন্য প্রেরণ। অর্থাৎ যেক্ষেত্রে নিম্ন আদালত কোন মামলার সঠিক নিষ্পত্তির জন্য বিচার্য বিষয় গঠন না করলে কিংবা তথ্যের কোন প্রশ্নে সঠিকভাবে বিচার সম্পন্ন না করলে, সেক্ষেত্রে আপিল আদালত সঠিকভাবে বিচার্য বিষয় স্থিরকরতঃ নিম্ন আদালতের প্রতি মামলাটি বিচারের জন্য প্রেরণের নির্দেশ দিতে পারেন।
(ঘ) অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করা অথবা প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্দেশ দান করা। অর্থাৎ যেক্ষেত্রে নিম্ন আদালত এমন সব প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছে যা গ্রহণ করা উচিৎ ছিল; সেক্ষেত্রে আপিল আদালত এরূপ কোন সাক্ষীকে পরীক্ষা করার প্রয়োজন মনে করলে অথবা অন্য কোন উল্লেখযোগ্য কারণে নিমন আদালতের প্রতি অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দান করতে পারেন।
এই আইনের ১০৭ নং ধারায় (২) নং উপধারায় বলা হয়েছে যে, অত্র আইন বলে কোন মৌলিক এখতিয়াসম্পন্ন আদালতে উপর তথাকার মামলার ব্যাপারে যেরূপ ক্ষমতা এবং কর্তব্য আরোপিত হয়ে থাকে, উল্লেখিত শর্ত সাপেক্ষে আপিল আদালতের উপরও এরূপ ক্ষমতা এবং প্রায় একইরূপ কর্তব্য বর্তাইবে।
আপিল আদালতে অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ক্ষমতাবলী সম্পর্কে ১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধির ৪১ নং আদেশের ২৩ নং বিধি হতে ২৯ নং বিধির বিধান সমুহে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
দেওয়ানি কার্যবিধির ৪১ নং আদেশের ২৩ নং বিধিতে বলা হয়েছে যে, যেক্ষেত্রে নিম্ন আদালত কোন প্রাথমিক বিষয়ের ভিত্তিতে মামলা নিষ্পত্তি করে ডিক্রী প্রদান করেছেন এবং সে আদালতের ডিক্রি বিরুদ্ধে আপিল করা হলে, উক্ত ডিক্রীটি যদি আপিলে রদ হয়ে যায়, তবে সেক্ষেত্রে আপীর আদালত সঙ্গত মনে করলে মামলাটি পুনর্বিচারের জন্য বিচারকারী আদালতে প্রেরণ করতে পারবেন, এবং পুনর্বিচারকালে কি কি বিচার্য বিষয় বিবেচনা করতে হবে তৎসম্পর্কে নির্দেশ দিতে পারবেন।
যে সকল সাক্ষ্য প্রমাণ প্রথম বিচারকালে গ্রহণ করা হয়েছিল, সে সব সাক্ষ্য প্রমাণগুলি প্রয়োজনীয় ব্যতিক্রম সাপেক্ষে পুনর্বিচারকালেও প্রমাণস্বরূপে গ্রাহ্য হবে;
একই কার্যবিধির ৪১নং আদেশের ২৪ বিধিতে বলা হয়েছে যে, নথিপত্র প্রাপ্ত প্রমাণাদি দৃষ্টে আপিল আদালত যদি মনে করেন যে, রায় প্রদানের জন্য নথিপ্রত্র প্রাপ্ত উক্ত প্রমাণগুলি যথেষ্ঠ, তবে সেক্ষেত্রে করতে পারবেন।
এইরূপ ক্ষেত্রে, যে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হয়েছে, সে আদালত যে সকল কারণের ভিত্তিতে মামলা নিষ্পত্তি করেছিলেন আপিল আদালত সেগুলি ব্যতীত অন্য কারণের ভিত্তিতেও মামলা নিষ্পত্তি করতে পারবেন।
৪১ নং আদেশের ২৫নং বিধির বিধান মতে, যে আদালতের ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হয়েছে, সে আদালত যদি বিচার্য বিষয় প্রণয়ন বা বিবেচনা না করে থাকেন, অথবা তথ্য সংক্রান্ত এমন কোন প্রশ্ন নিষ্পত্তি না করে থাকেন, যা আপিল আদালত প্রয়োজনবোধে সংশ্লিষ্ট বিচার্য বিষয় প্রণয়ন করে বিচারকারী আদালতে উহা বিচারের জন্য প্রেরণ করতে পারবেন। এরূপ ক্ষেত্রে, আপিল আদালত উক্ত নিম্ন আদালতকে প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত প্রমাণ গ্রহণের নির্দেশ দান করবেন।
একই আদেশের ২৮নং বিধিতে বলা হয়েছে যে, যেক্ষেত্রে আপিল আদালত অতিরিক্ত প্রমাণ দাখিলের অনুমতি দান করবেন, সেক্ষেত্রে আপিল আদালত স্বয়ং উক্ত প্রমাণ গ্রহণ করতে পারবেন, অথবা যে আদালতের ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপিল দায়ের হয়েছে, সে আদলতকে কিংবা অপর কোন অধঃস্তন আদালতকে উক্ত প্রমাণ গ্রহন করে তা আপিল আদালতে প্রেরণ করার নির্দেশ দিতে পারবেন।
আপিল আদালতের ক্ষমতা সম্পর্কে পরিশেষে এই আদেশের ২৯নং বিধিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যেক্ষেত্রে আপিল আদালত অতিরিক্ত প্রমাণ গ্রহণের অনুমতি বা নির্দেশ দান করবেন, সেক্ষেত্রে যে সমস্ত বিষয় সম্পর্কে উক্ত প্রমাণ গ্রহণ করা হবে, তা আপিল আদালত নির্দিষ্ট করে দিবেন এবং মামলার কার্যবিবরণীতে উক্ত বিষয়গুলি লিপিবদ্ধ করে রাখিবেন।
এইভাবে, উপরে উল্লেখিত বিধান সাপেক্ষে, আপিল আদালত তার উপর অর্পিত ক্ষমতাবলী প্রয়োগ করে থাকেন।
আপীল আদালত কি অতিরিক্ত সাক্ষ্য নিতে পারে? যদি পারে, কোন কোন অবস্থায়?
(Can the appellate court take additional evidence? If so, under what circumstances?)
১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধর ৪১নং আদেশের ২৭নং বিধির বিধান সাপেক্ষে আপীর আদালত অতিরিক্ত সাক্ষ্য নিতে পারে।
যে সকল অবস্থায় আপীল আদালত অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করার অধিকারী সেই সম্পর্কে এই আদেশের ২৭নং বিধির (১) নং উপবিধিতে বলা কিংবা দলিলের মাধ্যমে কোনরূপ অতিরিক্ত সাক্ষ্য প্রামণ দাখিল করতে পারবে না।
তবে, নিম্নলিখিত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আপীর আদালত এইরূপ অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য অনুমতি দান করতে পারেন; যেমন—
ক) যে আদালতে ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপীল দায়ের করা হয়েছে, সেই আদালত এমন কোন প্রমাণ অগ্রাহ্য করে থাকেন, যা গ্রহণ করা উচিত ছিল; অথবা
খ) রায় প্রদানের সুবিধার্থে কিংবা অন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ কারণে আপীল আদালত কোন দলিল উপস্থাপন করা অথবা সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ করা প্রয়োজন মনে করেন, তবে আদালত উক্ত দলিল বা প্রমাণ উপস্থাপন করার বা সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ করার অনুমতি দিতে পারবেন।
পরিশেষে, দেওয়ানি কার্যবিধির ৪১নং আদেশের ২৭নং বিধির (২) নং উপবিধিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আপীল আদালত যেক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্রমাণ দাখিলের অনুমতি দান করবে, সেইক্ষেত্রে আদালত উহার কারণ লিপিবদ্ধ করে রাকিবেন।
কোন কোন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যায় না
(some orders cannot be appealed according to cpc)
যে যে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যায়, সে সম্পর্কে দেওয়ানি কার্যবিধি, ১৯০৮ এর ধারা-১০৪ এ বলা হয়েছে। উক্ত ধারায় বর্ণিত আদেশ ব্যতীত অন্যান্য যে কোন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যায় না। ধারা-১০৪ অনুযায়ী আপিলযোগ্য আদেশসমূহ হল:
(ক) ৯৫ ধারার অধীনে প্রদত্ত আদেশ;
(খ) ডিক্রি জারিতে গ্রেপ্তার কিংবা দেওয়ানি কারাগারে আটকের আদেশ ব্যতীত এই আইনের যে কোন বিধানের অধীনে জরিমানা আরোপ কিংবা কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার কিংবা দেওয়ানি কারাগারে আটক করার নির্দেশমূলক আদেশ;
(গ) নিয়মাবলীর মাধ্যমে আপিল ব্যক্তভাবে মঞ্জুর হয় এরূপ নিয়মাবলীর অধীনে প্রদত্ত আদেশ।
অর্থাৎ উপরোক্ত আদেশসমূহ ব্যতীত অন্য কোন আদেশের আপিল চলবে না।
মিস আপীল(missed appeal)
গ্রাম আদালতের কোন আদেশ রদ করার জন্য সহকারী জজ আদালতে যে আবেদন পেশ করা হয়, তাই সহকারী জজ আদালতে মিস্ আপীল হিসাবে পরিচিতি। তদ্ব্যতীত সহকারী জজ বা যুগ্ম জেলা জজ আদালতের অন্তবর্তীকালীন আদেশের বিরুদ্ধে জেলা জজ আদালতে মিস আপীল করতে পারেন।
পাল্টা আপীল(counter-appeal or cross-appeal)
"পাল্টা আপীল" বলতে নিম্ন আদালতের ডিক্রীর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে প্রতিবাদী এবং আপীলকারী কর্তৃক পৃথক পৃথক আপীল পেশ করার মাধ্যমে পাল্টা আপত্তি উত্থাপন করাকে বুঝায়। একটি স্মারকলিপি আকারে উচ্চ আদালতে "পাল্টা আপীল" রুজু করা হয়।
পাল্টা আপীলের ক্ষেত্রের প্রধান লক্ষীণয় বিষয় হল এই যে নিম্ন আদালতের ডিক্রীর ব্যাপারে যে, 'পাল্টা আপত্তি' উত্থাপন করা হয় তা আংশিক বিবাদীর পক্ষে এবং অবশিষ্ট অংশ বিবাদীর বিপক্ষে থাকে এবং কোন মামলার বিবাদী আপীলকারী হলে উক্ত ডিক্রীর সেই অংশ, যা তার বিরুদ্ধে তা রদ করার জন্য উচ্চ আদালতে পৃথক পৃথক ভাবে আপীল পেশ করতে পারেন। কিন্তু ডিক্রীর উভয় পক্ষই যদি আপীল পেশ করে থাকে, তবে তা পাল্টা আপীলের ন্যায় রূপ লাভ করে।
'পাল্টা আপীলের উদাহরণস্বরূপ বিশেষভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, জনৈক বাদী 'ক' তার বিবাদী খ-এর তার বিবাদী খ-এর বিরুদ্ধে পঞ্চাশ হাজার টাকার একটি দাবী উত্থাপন করে মামলা রুজু করিলে আদালত অতঃপর বাদী ক-কে আটচল্লিশ হাজার টাকার মঞ্জুর করে একটি ডিক্রী প্রদান করে। এইরূপ ডিক্রীর দ্বারা ক এবং খ উভয়ই অসন্তুষ্ট হলে তখন তারা আপীল পেশ করার অধিকার লাভ করে।
এইক্ষেত্রে বাদী 'ক' যদি তার মামলার হয়রানী মূলক পরিস্থিতি হতে অব্যাহতি পাইতে চায়, তবে সেইক্ষেত্রে ডিক্রীর যে অংশ খ-এর বিরুদ্ধে সেই ব্যাপারে 'ক' আপীল করা হতে বিরত থাকতে পারে।
কিন্তু 'খ' যদি এককভাবে আপীল দায়ের করে, তা হলে যেসব ব্যাপারে 'ক' আপীল করতে পারিত, সেইসব ব্যাপারে 'ক' ডিক্রীর বিরুদ্ধেও পাল্টা আপত্তি উত্থাপন করতে পারে।
এইভাবে, যে ক্ষেত্রে নিম্ন আদালত কর্তৃক জারীকৃত কোন ডিক্রী আংশিকভাবে বিবাদীর পক্ষে এবং অংশত বাদীর বিপক্ষে এবং এইরূপ কোন ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপীল করা হয়েছে। সেইক্ষেত্রে বিবাদী ডিক্রীর যে অংশের ব্যাপারে আপত্তি উত্থাপন করতে পারে যা তার বিরুদ্ধে, অনুরূপভাবে পৃথক আপীলের মাধ্যমেও সে উক্ত আপত্তি উত্থাপন করতে পারে।
এইরূপ আপত্তি পাল্টা আপীলের ন্যায় কার্যকরযোগ্য বলে বিবেচিত হয়ে থাকে।
পাল্টা আপীলের বিধি বিধান সম্পর্কে ১৯০৮ সনের দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ৪১নং আদেশের ২২নং বিধির (১) উপবিধিতে বলা হয়েছে যে কোন রেসপন্ডেন্ট যদি ডিক্রীর কোন অংশ বিশেষের বিরুদ্ধে আপীল নাও করে থাকে, তথাপি সে নিম্ন আদালতের ডিক্রীর অংশ বিশেষ সমর্থন সেই অংশ সম্পর্কে পাল্টা আপীল বা আপত্তি উত্থাপন করতে পারবে।
তবে, আপীলের শুনানীর জন্য দিন ধার্য্য সম্পর্কে তার উপর কিংবা তার উকিলের উপর নোটিশ জারি হওয়ার তারিখ হতে এক মাসের মধ্যে অথবা আদালত যদি তদপেক্ষা অধিক সময় মঞ্জুর করেন, তবে উক্ত সময়ের মধ্যে আপীল আদালতে উক্ত পাল্টা আপীল বা আপত্তির আবেদন দাখিল করতে পারবে।
একই আদেশের ২২নং বিধির (৩) নং উপবিধিতে বলা হয়েছে যে, আপত্তির আবেদনের একটি নকল প্রাপ্তি সম্পর্কে অপর পক্ষের বা তার কোন আইনজীবির একটি লিখিত রসিদ উক্ত আবেদনের সাথে দাখিল করা না হলে আপীল আদালত উহার একটি নকল আবেদন দাখিল হওয়ার পর যথাশীঘ্র সম্ভব রেসপন্ডেন্টের খরচার অপর পক্ষকে কিংবা তার মনোনীত কোন আইনজীবিকে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।
"পাল্টা আপীল" সম্পর্কে পরিশেষে এই আদেশের ২২নং বিধির (৪) নং উপবিধিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হইযাছে যে, কোন ক্ষেত্রে রেসপন্ডেন্ট অত্র বিধি অনুসারে আপত্তির আবেদন দাখিল করে থাকলে যদি মূল আপীল প্রত্যাহার করা হয়, অথবা কোন ত্রুটির কারণে তা খারিজ হয়ে যায়, তবে সেইক্ষেত্রে আপত্তিটি অপর পক্ষকে উপযুক্ত নোটিশ দেওয়ার পর উহার শুনানী অনুষ্ঠান এবং উক্ত আপত্তির নিষ্পত্তি করা যেতে পারে।
'আপিল মোকদ্দমার ধারাবাহিকতা
(appeal is a continuation of the suit)
মোকদ্দমা হচ্চে কোন বিচার্য বিষয় নিয়ে বাদী-বিবাদীর মধ্যকার বিরোধ মীমাংসার জন্য আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দান কার্যক্রম। প্রথম আদালতে রুজুকৃত মামলার বিষয়বস্তুর উপর সে আদালত যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে, তা সে আদালতের জন্য চূড়ান্ত। কিন্তু মোকদ্দমাভুক্ত কোন পক্ষ যদি ঐ সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হয়, তবে কেন সন্তুষ্ট নয় তার কারণ দর্শিয়ে উচ্চ আদালতে এর বিরুদ্ধে আপিল করতে পারে। অতঃপর আপিলে যে সিদ্ধান্ত প্রদত্ত হয় তাই মোকদ্দমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত নিম্নাদালতে সিদ্ধান্তের অনুকূলে কিংবা প্রতিকূলেও হতে পারে। তবে আপিল আদালতের সিদ্ধান্তই কার্যকরী হয়ে থাকে। বস্তুত, এ জন্যেই বলা হয় যে, "আপিল মোকদ্দমার ধারাবাহিকতা।"
এ প্রসঙ্গে আপিলের সংজ্ঞাটি বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য। কেননা এর দ্বারা আলোচ্য বিষয়টি পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হয়ে যায়।
আপিলের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে কলিকাতা হাইকোর্টের বিজ্ঞ বিচারপতি বলেন যে, "নিম্ন আদালত কর্তৃক প্রদত্ত কোন মোকদ্দমার রায়ের বিরুদ্ধে যে কোন ক্ষুব্ধপক্ষ ঐ মোকদ্দমার রায় বাতিল, সংশোধন বা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য উচ্চ আদালতে মেমোরেন্ডামের আকারে যে দরখাস্ত দাখিল করে তাকেই বলা হয় 'আপিল'।
নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্তই কোন মোকদ্দমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বা সমাপ্তি নয়। যদি এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়, এ ক্ষেত্রে আপিল আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়। সুতরাং আপিল মোকদ্দমার ধারাবাহিকতা।
What are the powers of the appellate court?; What is the function of the appeal?; What are the objectives of appeal?; What is the meaning of appellate power?; Appeal under crpc in bangladesh; Appeal and revision in CrPC; Revision under crpc in Bangladesh; Who can appeal; Abatement of appeal; High Court Civil Revision; Can appellate Court take additional evidence; Pending appeal; Meaning of Appeal in CPC; Essentials of Appeals; Right to Appeal; One Right to Appeal in CPC; No Right to Appeal under CPC; Who Can File an ; Who Cannot File an Appeal in CPC?; Characteristics of An Appeal; Form of Appeal: Rules; Condonation of Delay; Stay of Proceedings; Summary ; Doctrine of Merger; Cross Objections; Powers of Appellate Court under CPC; Power to decide a case finally (Section 107(l)(a) and Rule 24); Power of remand (Section 107(1)(b) and Rule 23); Power to frame issues and refer them for trial (Section 107(1)(c), Rules 25 and 26); Power to take additional evidence (Section 107(1)(d), Rules 27-29); Power to modify the decree (Rule 33); First Appeal in CPC; Second Appeal in Civil Procedure Code; Conversion of an Appeal into Revision; Appeals from Orders of the Tribunal; Appeals By Indigent Persons; Appeals To The Supreme Court; Appeal under crpc in ; Civil Appeal format in Bangladesh; Leave to appeal meaning in bengali; Criminal appeal in High ; Appeal against conviction ; What is appeal in law; Civil Petition for leave to appeal; What is the concept of appeal?; What is a writ petition in Bangladesh High court?; What are the appellate courts in Mississippi?; What is the meaning of special ; What are all 3 appeals?; What are the 7 appeals?; How do you explain an appeal?; What is appeal and example?; What is in appeal?; What is the meaning of Appel?; What are 2 examples of appeal?; What is appeal writing?; What does "on appeal" mean?; Criminal appeal in Bangladesh; High Court Writ Petition List; Writ petition in Bangladesh; High Court Division Cause List; Civil Appeal format in Bangladesh; Criminal appeal in High Court; What is appeal in law; DLR cases in Bangladesh; What does appeal against mean?; What is an example of appeal?; What is meant by cross appeal?; What is the full meaning of appeal?; What is appeal against order?; What is the most common reason for an appeal?; What is the highest court of appeal?; What happens if an appeal is won?;
0 Comments