সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

বাংলাদেশের সংবিধানে "আইন" (Law) এবং "আইনের ব্যাখ্যা" (Interpretation of Law)

 

বাংলাদেশের সংবিধানে "আইন" (Law) এবং "আইনের ব্যাখ্যা" (Interpretation of Law)

বাংলাদেশের সংবিধানে "আইন" (Law) এবং "আইনের ব্যাখ্যা" (Interpretation of Law) সম্পর্কিত বিষয়গুলো কিছু নির্দিষ্ট অনুচ্ছেদে আলোচনা করা হয়েছে। নিচে তা বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো:


১. “আইন” এর সংজ্ঞা – অনুচ্ছেদ ১১১, ১৫২

অনুচ্ছেদ ১৫২ (সংজ্ঞা):

এই অনুচ্ছেদে “আইন” শব্দের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে:

“আইন” অর্থ যেকোন আইন, অধ্যাদেশ, আদেশ, বিধিমালা, প্রবিধানাবলি, উপ-আইন, বিজ্ঞপ্তি এবং অন্যান্য আইনগত দলিল যা আইনানুগ ক্ষমতাবলে প্রণীত।

অর্থাৎ:

  • সংসদে প্রণীত আইন (Act of Parliament)
  • অধ্যাদেশ (Presidential Ordinance)
  • বিধিমালা / প্রবিধানাবলি (Rules, Regulations)
  • সরকার বা সংস্থা কর্তৃক প্রণীত উপ-আইন (By-laws)

এসব কিছু “আইন” এর অন্তর্ভুক্ত।

অনুচ্ছেদ ১১১ (বাধ্যতামূলক নজির):

"বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় বাধ্যতামূলক এবং হাইকোর্ট বিভাগ ও নিম্ন আদালতসমূহ কর্তৃক তা অনুসরণীয়।"

অর্থাৎ, আপিল বিভাগের রায় ও সিদ্ধান্তগুলো আইন হিসেবে গণ্য হয়, এবং সেগুলোর ব্যাখ্যাও কার্যত আইন হয়ে দাঁড়ায়।


২. আইনের ব্যাখ্যা – বিচার বিভাগীয় ক্ষমতা: অনুচ্ছেদ ১০২ ও ১০৫

অনুচ্ছেদ ১০২:

এই অনুচ্ছেদ বিচার বিভাগের মাধ্যমে সংবিধান ও আইনসমূহের বিচারিক ব্যাখ্যা প্রদানের ক্ষমতা নিশ্চিত করে। জনগণ সংবিধানের লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে রিট করতে পারে। এর ফলে হাইকোর্ট আইন এবং সংবিধানের যথার্থ ব্যাখ্যা দেয়।

অনুচ্ছেদ ১০৫:

সুপ্রীম কোর্ট পূর্বে প্রদত্ত সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনার (Review) সুযোগ রাখে, যার মাধ্যমে কোনো আইনের ব্যাখ্যা পরিবর্তিত বা পুনঃনির্ধারিত হতে পারে।


৩. সংবিধানের সর্বোচ্চতা – অনুচ্ছেদ ৭

অনুচ্ছেদ ৭(২):

“এই সংবিধানই প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন।”

এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংবিধানই চূড়ান্ত আইন, এবং অন্য যেকোনো আইন বা রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ যদি সংবিধানের পরিপন্থী হয়, তা বাতিলযোগ্য।


৪. আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত – অনুচ্ছেদ ৮০–৮৫

এই অনুচ্ছেদগুলোতে সংসদ কর্তৃক আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া বর্ণনা করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির সম্মতিতে আইন কার্যকর হয়, এবং এগুলো সংবিধানের ব্যতিক্রম হতে পারে না।

Post a Comment

0 Comments